আগামী বাজেটে থাকছে সবার জন্য পেনশন কাঠামো

ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক

আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সবার জন্য পেনশন কাঠামো রাখার পরিকল্পনা করছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শে এ কাজটি করছে অর্থ বিভাগ। সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা বাস্তবায়নে একটি কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে। কর্তৃপক্ষের প্রধানের পদবি হবে চেয়ারম্যান। তার অধীনে সদস্য থাকতে পারেন তিন থেকে চার জন। কর্তৃপক্ষ গঠনের পর রূপরেখার খসড়া চূড়ান্ত করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে এটি চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্র।

জানা গেছে, অর্থ মন্ত্রণালয় এখন সর্বজনীন পেনশনের রূপরেখার বিষয়ে সবার মতামত নিচ্ছে। এটি পাওয়ার পর অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় করা হবে। সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে খসড়া চূড়ান্ত করা হবে। এরপর অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে— চা দোকানদার, পান দোকানদারসহ সবাইকে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় আনা হবে।

অর্থ বিভাগ জানিয়েছে, সবার জন্য পেনশন স্কিম চালু হলে দেশের ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সব কর্মক্ষম নাগরিক এর আওতায় আসবেন। অংশ নিতে পারবেন প্রবাসীরাও।

বর্তমানে বাংলাদেশে সরকারি চাকরিজীবীরা অবসরে যাওয়ার পর প্রতি মাসে আর্থিক সুবিধা পান। এটি অব্যহত থাকে আমৃত্যু। সেই চাকরিজীবী মারা গেলে তার স্ত্রী এবং বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী সন্তান থাকলে তাকেও আমৃত্যু পেনশন দেয় সরকার। তবে বেসরকারি খাতে কোথাও কোথাও ভবিষ্যৎ তহবিল (প্রভিডেন্ড ফান্ড) এবং গ্র্যাচুইটি সুবিধা থাকলেও পেনশনের ব্যবস্থা নেই। ফলে চাকরি শেষে অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হন বিপুলসংখ্যক মানুষ। এ ছাড়া যারা অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন এবং যারা খেটে খাওয়া মানুষ, তারা অবসরে যান শূন্য হাতে। সর্বজনীন পেনশন চালু হলে শেষ জীবনে এসব মানুষের আর্থিক অনিশ্চয়তা দূর হবে।

রূপরেখা  অনুযায়ী, দেশের ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়স্ক প্রত্যেক নাগরিকের জন্য একটি আলাদা পেনশন অ্যাকাউন্ট থাকবে। ফলে চাকরি পরিবর্তন করলেও পেনশন অ্যাকাউন্ট অপরিবর্তিত থাকবে। ওই অ্যাকাউন্টে সংশ্লিষ্ট জন যে পরিমাণ চাঁদা দেবেন, তার বাইরে একটি অংশ দেবে সরকার। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মাসিক চাঁদা জমা দিতে হবে। এরপর মেয়াদ শেষে পেনশনভোগীদের সুবিধা দেওয়া হবে। আমৃত্যু পেনশন সুবিধা বহাল থাকবে।

অর্থ বিভাগ জানিয়েছে, ধারাবাহিকভাবে নির্দিষ্ট অঙ্কের মাসিক চাঁদা প্রদান সাপেক্ষে সবাইকে পেনশনের আওতায় আনা হবে। চাঁদার পরিমাণ কত হবে এবং পেনশনভোগী কীভাবে কতটা সুবিধা পাবেন, তা নির্ধারণের জন্য আলাদা কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে। তারাই বিষয়টি নির্ধারণ করবে। পেনশনের অর্থ এককালীন উত্তোলন করা যাবে না। সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ঋণ হিসেবে তোলা যাবে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণায় সর্বজনীন পেনশনের প্রস্তাব তুলেছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এতে তিনি বেসরকারি পেনশনের একটি রূপরেখা প্রণয়নের কথাও বলেছিলেন।